Help line 01755-660522

Search
বিষন্নতা এবং খাদ্যের মধ্যে জটিল সম্পর্ক

বিষন্নতা একটি বিস্তৃত মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থা যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে। যদিও বিষন্নতার কারণ অনেক, তবুও গবেষকরা ক্রমবর্ধমানভাবে বিষন্নতা এবং খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে জটিল সংযোগ অন্বেষণ করেছেন। আমাদের গ্রহণকৃত খাদ্যগুলি কীভাবে আমাদের মানসিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করতে পারে তা নিয়েই নিম্নে আলোকপাত করা হল।

পুষ্টির ঘাটতি এবং বিষন্নতা

বিভিন্ন খাদ্য উপাদান বা পুষ্টির ঘাটতিতে বিষণ্ণতা হয়ে থাকে। ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন বি ৬, বি ১২ এবং ফোলেটের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পুষ্টি উপাদানগুলোর অপর্যাপ্ততায় বিষন্নতার লক্ষণগুলি প্রকাশ পেতে শুরু করে। অতএব, একটি সুষম খাদ্য তালিকা বজায় রাখতে হবে যাতে এই পুষ্টি উপাদানের উৎসগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং যা উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে সাহায্য করতে পারে।

প্রোবায়োটিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য

ফাইবার এবং গাঁজনযুক্ত খাবার পরিপাকতন্তের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখে, যা সম্ভাব্য বিষন্নতার ঝুঁকি হ্রাস করে। দই এবং অন্যান্য গাঁজনযুক্ত পণ্যগুলিতে প্রাপ্ত প্রোবায়োটিকগুলি মেজাজ নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।

চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার

চিনি এবং উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবারের অত্যধিক ব্যবহারে হতাশার ঝুঁকি বাড়ে। উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধি করে, যা মেজাজ এবং শরীরের শক্তির মাত্রাকে প্রভাবিত করে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রায়শই ইনফেকশনের ঝুঁকি বৃদ্ধিতে অবদান রাখে যা রোগমুক্তির পাশাপাশি বিষন্নতাকেও দীর্ঘায়িত করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভূমিকা

ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্যে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস মোকাবেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা বিষন্নতার বিকাশে জড়িত। একজন মানুষের ডায়েটে বিভিন্ন রঙিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতাশার লক্ষণগুলির বিরুদ্ধে সুরক্ষামূলক অবদান রাখতে পারে।

মনযোগী আহার এবং মানসিক সুস্থতা

নির্দিষ্ট পুষ্টির বাইরে, আমরা যেভাবে খাবারের প্রতি রুচি অনুভব করি তা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। খাদ্যের সাথে একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং সংযম অনুশীলন করা সামগ্রিক মানসিক সুস্থতায় অবদান রাখতে পারে।
বিষন্নতা এবং খাদ্যের মধ্যে সম্পর্ক জটিল এবং বহুমুখী। যদিও কোনও স্হায়ী সমাধান নেই, তবুও বিভিন্ন গবেষণায় এটাই দেখা যায় যে একটি সুষম খাদ্য তালিকা বজায় রাখা, প্রয়োজনীয় পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং মননশীল খাদ্যাভ্যাস উন্নত মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে অবদান রাখতে পারে। কোন ব্যক্তির তার মানসিক সুস্থতার উপর নির্ভর করে খাদ্যতালিকা তৈরি করা উচিত; এছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং প্রয়োজনের সময় পেশাদার পরামর্শকের পরামর্শ নেয়াটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়ে চলমান নানা গবেষণা বিষন্নতা এবং খাদ্যের মধ্যে যোগসূত্রগুলি সহজে বোঝা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নে করণীয় নানা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সামগ্রিকভাবে সহায়তা করবে।

রাশিদা আফরোজ
ফিটনেস নিউট্রিশনিষ্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *