মেদ, ওভার অয়েট, সেলুলাইট বা অবেসিটি – প্রতিটা শব্দই আসলে একই অর্থ বহন করে। আর সেটা হচ্ছে শরীরের অতিরিক্ত বা বাড়তি ওজন। শরীরের এই বাড়তি ওজন স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম ও প্রধান কারণ। এমনকি এতে মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে। তাই, অবেসিটি প্রতিকার ও সমাধানে চাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। আর এজন্য আপনাকে আগে জেনে নিতে হবে অবেসিটি সম্পর্কিত বিস্তারিত সব তথ্য। আর আজকের আয়োজনটি সাজানোই হয়েছে অবেসিটি বা স্থূলতাকে কেন্দ্র করে। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেই –
অবেসিটি কি?
অবেসিটির বাংলা অতিস্থূলতা। অবেসিটি মূলত শরীরের একটি বিশেষ অবস্থা। শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি জমে গিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসের কারণে দেহের ওজন দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে একটা সময় পরে শরীরের চর্বি ও মেদ জমতে জমতে অবেসিটি দেখা দেয়।বিশ্বব্যাপী অবেসিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা, পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর কারণগুলোর সাথে স্থূলতার নামটাও যুক্ত। BMI (Body Mass Index) বডি ম্যাস ইনডেক্সের মাধ্যমে অবেসিটি পরিমাপ করা হয়। বিএমআই হচ্ছে শরীরের উচ্চতা ও ওজনের আনুপাতিক হার বা পরিমাপ। সাধারণত ১৮ থেকে ২২/২৩ এর মধ্যে বিএমআই থাকলে সেটাকে স্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হয়। অর্থাৎ, একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক বিএমআই এর মাত্রা হলো ২০-২৫।
কিন্তু যদি এর চাইতে বেশি মানে ২৫-৩০ হয় তাহলে তাকে স্থূল বলা হয়ে থাকে। আর যদি ৩০ এর অধিক হয় তাহলে ক্লাস-১ অবেসিটি, ৩০-৩৫ হলে ক্লাস-২, ৩৫-৪০ হলে ক্লাস-৩ এবং ৪০ এর অধিক হলে সুপার অবেসিটি বলা হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায়।
অবেসিটি কেন হয়?
নানাবিধ কারণে অবেসিটি হয়ে থাকে। তবে মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় নিষ্ক্রিয় থেকে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করাকে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসের কারণেই মূলত এমনটা হয়ে থাকে। এছাড়াও, আরো নানাবিধ কারণ রয়েছে অবেসিটির পেছনে। চলুন এক নজরে জেনে নেয়া যাক –শারীরিক কার্যকলাপের অভাব – যারা শারীরিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত নয় তাদের দ্রুত মুটিয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। যা অবেসিটির অন্যতম কারণ। শারীরিক কার্যকলাপ না থাকলে শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়ে। অর্থাৎ শরীরের পেশী দুর্বল হতে থাকে আর ক্ষতিকর চর্বি জমাটবদ্ধ হতে থাকে।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন – অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন অবেসিটির অন্যতম কারণ। দেরি করে ঘুমানো, দেরি করে ঘুম থেকে উঠা, সকালের খাবার দেরি করে খাওয়া এবং আরো নানাবিধ অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের ধারা শরীরে স্থূলতা এনে দেয়।
খাদ্যাভাস – অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মধ্যে খাদ্যাভাসও আছে। অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি এবং সুগার আছে এমন সব খাদ্য গ্রহণের কারণে দ্রুত মুটিয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ফাস্ট ফুড, ড্রাই ফুড, মিষ্টি ইত্যাদি জাতীয় খাবারে এনার্জি থাকে কম। যা শরীরকে মুটিয়ে যেতে সাহায্য করে।
জেনেটিক – পিতা-মাতার কাছ থেকে অবেসিটি পাবার সম্ভাবনা থাকে অনেকাংশেই। লেপটিন এর কারণে অবেসিটি দেখা দেয়। লেপটিন হচ্ছে একটি হরমোন যা মূলত ফ্যাট বা চর্বি থেকে তৈরি হয়। লেপটিন মূলত শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। কোনো কারণে যদি এই লেপটিনের অভাব হয় শরীরে তখন অবেসিটি দেখা দেয়।
সাইকোলজিক্যাল বা মনস্তাত্ত্বিক কারণ – সম্প্রীতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিছু কিছু মানুষের সাইকোলজিক্যাল বা মনস্তাত্ত্বিক কারণে অবেসিটি হয়। বিষণ্ণতা, একাকীত্ব, মন খারাপ – এসব থেকে নিজেকে মুক্তি দিতে অনেক মানুষই অতিরিক্ত ঘুম ও খাদ্যাভাস করে যা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের দিকে ধাবিত করে। আর অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন মানেই অবেসিটি হবার আশংকা।
মেডিকেশন – মেডিকেশন বা ওষুধ সেবন ভালো তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ওষুধের কারণেই অবেসিটি হবার আশঙ্কা দেখা দেয়। বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন দূর করতে অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট জাতীয় ওষুধ; এছাড়া, খিঁচুনি, ডায়াবেটিস, ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ, কর্টিকোস্টেরয়েড ইত্যাদির ওষুধ সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া স্বরূপ ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়। তাই, এরকম সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে দ্রুত পরামর্শ করা উচিত।
অবেসিটির কারণে কি কি সমস্যা দেখা দিতে পারে?
অবেসিটিই একটা রোগের নাম। কিন্তু অবেসিটির কারণেও নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। আরো সহজভাবে বললে অবেসিটি নিজে রোগ হয়ে শরীরে আরো অন্যান্য রোগ ডেকে নিয়ে আসে। আরো দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে – অবেসিটির কারণে অনেক সাধারণ ও ছোট রোগও বড় ও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। থাইরয়েড, বন্ধ্যাত্ব, মেলিটাস, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ইনসোমোনিয়া, মানসিক অবসাদ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। এছাড়াও, অবেসিটির কারণে উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে কোলাস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। যেটাকে মেটাবলিক সিনড্রোম বলে। এছাড়াও, অবেসিটির কারণে ক্যানসারের ঝুঁকিও থাকে।অবেসিটি থেকে বাঁচার উপায় কি?
অবেসিটি থেকে বাঁচার দুটি উপায় আছে। এক হচ্ছে ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায় আর দ্বিতীয়ত ট্রিটমেন্ট। শুরুতেই আমরা ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।অবেসিটি থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। পর্যাপ্ত ঘুম, পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ ও সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে অবেসিটি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
– শারীরিক পরিশ্রম বা যোগব্যায়াম, অর্থাৎ শারীরিক কসরত বা এক্সারসাইজ করতে হবে নিয়মিত।
– ডিটক্স ওয়াটারের ব্যবহার। কেননা, এটি ওজন নিয়ন্ত্রণের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
– উচ্চমাত্রায় ক্যালোরি থাকে এমন খাবার পারতপক্ষে বর্জন করাই ভালো।
– খাদ্য তালিকায় সবুজ অর্থাৎ শাকসবজির পরিমাণ বৃদ্ধি করুন।
তবে অনেক সময় এত কিছু মেইনটেইন করেও অবেসিটির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। আবার, অনেকেই চায় এতকিছু মেইনটেইন না করেও অবেসিটি থেকে মুক্তি পেতে। এছাড়াও, আরো অনেকেই আছে যাদের ইচ্ছে থাকে অতি অল্প সময়ে বেশি পরিমাণে ওজন কমিয়ে শরীর ফিট করতে। এরকম যাদের চিন্তাভাবনা তাদের জন্যই মূলত ট্টিটমেন্ট। এছাড়াও, অবেসিটির লেভেল যদি হয় সুপার তাহলেও ট্রিটমেন্টের দরকার হয়। আবার, শরীরের এক্সেসিভ ফ্যাট বার্ন করার জন্য শুধুমাত্র ডায়েট চার্ট ফলো করাই যথেষ্ট নয়। তাই, অতি অল্প সময়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে স্লিম ফিট থাকতে চাইলে এবং অবেসিটি থেকে বাঁচতে চাইলে ট্রিটমেন্ট অবশ্যই দরকার।
এমনই এক ট্রিটমেন্ট পাবেন বায়োজিনে। যার নাম – 3 Max Cool Shaping. মাত্র ১ মাসেই আপনি আপনার শরীরের ৫ কেজি পর্যন্ত ওজন কমিয়ে আনতে পারবেন। আর ৩ মাসে সর্বোচ্চ ১০ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। এই ট্রিটমেন্টে Body Composition Analyzer এর মাধ্যমে বডির ওভারঅল কন্ডিশন মাপা হয়। এরপর Cooling lipolysis, Cavitation, Ultrasound, এবং Multi-polar Radio Frequency এর মতো চারটি মেজর টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় ফ্যাট বার্ন করার জন্য।
কুলিং জেল দিয়ে শরীরের এক্সেসিভ ফ্যাট বার্ন, রিডাকশন এবং সাকসেন করে নেয়া হয়। তাই, নন-সার্জিক্যাল এই ট্রিটমেন্ট একদমই ব্যথামুক্ত এবং আরামদায়ক। এছাড়াও, ট্রিটমেন্ট পরবর্তী হেলদি লাইফের জন্য বায়োজিনের স্পেশালিস্ট ডক্টররা ডায়েট চার্ট দিয়ে থাকে। নির্ভরযোগ্য এই ট্রিটমেন্ট শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে শরীরকে করে হেলদি এবং পারফেক্ট স্লিমফিট। ফলে শরীর হবে ফিট, সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর।
Dr. Duati Paul
Medical OfficerI'm Dr Duati paul, a medical officer with a focus on asthetic dermatologist. I hold Mbbs from Enam medical college and have 3 yrs of experience in aminulla medical centre in feni and different clinics in feni. My work is driven by my passion for asthetic dermatologist, and I believe in purpose; value;clarity and strength.
Recent Post
শীতে চুলের যত্ন:খুশকি এবং চুল পড়ার সমস্যার
- January 20, 2025
- 1 min read
ওজন কমাতে শীতকালীন সবজি
- January 14, 2025
- 1 min read
Winter Skin Care Tips | শীতে ত্বকের
- January 12, 2025
- 1 min read
শীতকালেও সান প্রটেকশন কেন প্রয়োজন?
- January 5, 2025
- 1 min read
স্কিন কেয়ারে হাইজিন বজায় রাখার কিছু টিপস
- January 2, 2025
- 1 min read
স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট-এ বিনিয়োগ: লাভজনক কি?
- January 1, 2025
- 1 min read
Categories
- Antiaging (7)
- Baby Care (1)
- Body Care (23)
- Breast Tightening (1)
- Customer Relationship (1)
- Dry Skin Care (2)
- Eye Care (2)
- Face Care (8)
- Food & Nutrition (34)
- FRECKLES (1)
- Hair Care (11)
- Health and Wellness (9)
- Hyperpigmentation & Melasma Care (4)
- Lip Care (1)
- Mole (2)
- News & Events (20)
- Oily & Acne Skin Care (1)
- Skin Care (60)
- Skincare Tips (20)
- Smart Skin care & Life Style (9)
- Social (6)
- Sun Protection (7)
- Under Eye Dark Circle (1)
- Whitening & Brightening (4)
No Comments