Help line 01755-660522

Search
পিসিওএস জনিত সমস্যায় খাদ্য নির্দেশনা

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস (PCOS) হলো নারীদের একটি হরমোন জনিত রোগ। এই শারীরিক অবস্থার দরুন মহিলাদের ডিম্বাশয় অস্বাভাবিক পরিমাণে এন্ড্রোজেন নামক পুরুষ হরমোন তৈরি করে যা সাধারণত মহিলাদের দেহে অল্প পরিমাণে থাকে। এই হরমোনজনিত অস্বাভাবিকতার কারণে ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট তৈরি হয়। এসময়ে অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডকালীন সময়ে অতিরিক্ত রক্ত যাওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে মুখমণ্ডলে অতিরিক্ত চুল গজানো, ত্বক অতিরিক্ত তেলতলে হওয়া, ব্রন, দুর্বলতা, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
একজন নারী তার সন্তানধারণ সময়কালের অর্থাৎ পিরিয়ড হওয়ার পর থেকে মেনোপোজ হওয়ার সময় পর্যন্ত, যেকোনো সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
পিসিওএস এর কারণে নারীদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা যেমন- স্থুলতা বা অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ জনিত সমস্যা, বিষন্নতা, উদ্বেগ, যকৃতে প্রদাহ, গর্ভধারণে জটিলতা, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স দেখা দিতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এ রোগে আক্রান্ত রোগিদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি অন্যান্য রোগের ঝুঁকি এড়াতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

পিসিওস রোগিরা যে ধরনের খাবারকে প্রাধান্য দিবেন-

~ভাত, রুটি, ময়দার তৈরি খাবার একটু কম পরিমাণে খেতে হবে। ভাত রুটির খাওয়ার ক্ষেত্রে লাল চাল, লাল আটাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
~খাদ্যতালিকায় মাংসের চেয়ে মাছকে বেশি প্রাধান্য দিন। মাংসের ক্ষেত্রে লাল মাংসের পরিবর্তে মুরগীর মাংস খেতে পারেন।
~বাদাম ও বিচিজাতীয় শস্য যেমন- ডাল, শিমের বিচি, চিয়াসিড, ফ্ল্যাঙ্কসিড, কাঠবাদাম, আখরোট, মিষ্টিকুমড়ার বিচি পরিমিত পরিমানে গ্রহণ করা যেতে পারে একই সাথে প্রোটিন ও ওমেগা-৩ এর উৎস হিসেবে।
~রঙিন সবুজ শাকসবজি যেমন- লাল শাক, পালং শাক, ফুলকপি, ব্রকলি, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো ইত্যাদি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এগুলো রাখতে হবে।
~বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল খাবেন তবে মিষ্টি ফলের পরিবর্তে টক জাতীয় ফল বেশি খেতে হবে। ফলের জুসের পরিবর্তে গোটা ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে যেন বেশি ফাইবার পাওয়া যায়।
~খাবারে অলিভ অয়েল ব্যাবহার করা যেতে পারে।
~ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ যেমন-স্যামন, টুনা, ইলিশ ইত্যাদি মাছ খাওয়া উচিত।
~ফলিক এসিড ফিমেল রিপ্রোডাক্টিভ অরগ্যান সুস্থ রাখতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই ফলিক এসিডের উৎস হিসেবে পালংশাক, কলমি শাক, কলিজা, সবুজ শাক, ব্রকলি, বাঁধাকপি, ডিম বাদাম, পনির গ্রহন করতে হবে।
~প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণে (২.৫-৩লি.) পানি গ্রহণ করতে হবে এবং চা, কফি চিনিছাড়া পান করা যেতে পারে।
~চকলেট গ্রহনের ক্ষেত্রে ডার্ক চকলেট বেছে নিতে পারেন।
~প্রতিদিন ভিটামিন-সি এর উৎস হিসেবে আমলকি, লেবু, পেয়ারা, পেপে, টমেটোকে বেছে নিতে পারেন।

যে ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন-

~রিফাইন্ড আটা, ময়দা, চাল, পাস্তা ইত্যাদি।
~ইন্সট্যান্ট ব্রেকফাস্ট আইটেম যেমন-ওটস, কর্নফ্লেক্স, গ্রানোলা।
~ডুবো তেলে ভাজা খাবার যেমন-ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, চিপস ইত্যাদি ফাস্ট ফুড।
~বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয়, স্পোর্টস ড্রিংকস ও এলকোহল।
~বেকারীজাত খাবার যেমন- কেক, বিস্কুট, ডোনাটস ইত্যাদি ও বিভিন্ন ধরনের প্রসেসড খাবার।
~বাটার, মার্জারিন জাতীয় স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
~বিভিন্ন ধরনের রেড মিট, স্টেক, মগজ, ভুড়ি ইত্যাদি।

মনে রাখবেন, পিসিওএস রোগের চিকিৎসার সবচেয়ে প্রথম ও প্রধান অংশ হলো ওজন নিয়ন্ত্রণ। আর পিসিওএস রোগিদের উচ্চ রক্তচাপ, বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে বিধায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার বিষয়টি কোনভাবেই অবহেলা করা যাবে না।

Keya Akter
Fitness Nutritionist

I'm Keya Akter, a nutritionist specializing in public health and wellness enhancement. I hold both a Graduation and Post Graduation degree from the University of Dhaka and have gained valuable experience through an internship in clinical nutrition and diet at NICVD (National Institute of Cardiovascular Diseases). My work is driven by my passion for empowering individuals to achieve their health goals through personalized nutrition plans, and I believe in the transformative power of evidence-based practices and continuous learning. Connect with me to learn more about my professional journey.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *